শুক্রবার, ১৭ মে ২০২৪, ১০:০৬ অপরাহ্ন

সংবাদ শিরোনাম :
শিগগির মিলছে না পেমেন্ট গেটওয়েতে আটকা টাকা

শিগগির মিলছে না পেমেন্ট গেটওয়েতে আটকা টাকা

স্বদেশ ডেস্ক:

ই-কমার্স প্রতিষ্ঠানের পেমেন্ট গেটওয়েতে আটকে থাকা গ্রাহকদের অর্থ ফেরতের উদ্যোগ নিয়েছে বাণিজ্য মন্ত্রণালয়। এজন্য যেসব প্রতিষ্ঠানের বিরুদ্ধে মামলা নেই, সেগুলোর গ্রাহকের টাকা ফেরত দিতে বাংলাদেশ ব্যাংকের কাছে চিঠিও পাঠায় মন্ত্রণালয়; কিন্তু কোন কোন প্রতিষ্ঠানের বিরুদ্ধে মামলা নেই, সেই তালিকা নেই বাণিজ্য মন্ত্রণালয় ও কেন্দ্রীয় ব্যাংকের কাছে। ফলে গ্রাহকের আটকে থাকা টাকা ফেরত দেওয়া যাচ্ছে না। এজন্য পুলিশের কাছে ই-কমার্স প্রতিষ্ঠানগুলোর মামলা সংক্রান্ত তথ্য চেয়েছে বাণিজ্য মন্ত্রণালয়। সাত দিনের মধ্যে এসব তথ্য দিতে বলা হয়েছে।

এ বিষয়ে বাণিজ্য মন্ত্রণালয়ের অতিরিক্ত সচিব ও সরকারের উচ্চপর্যায়ের গঠিত কমিটির সমন্বয়ক এএইচএম সফিকুজ্জামান বলেন, যেসব ই-কমার্স প্রতিষ্ঠানের বিরুদ্ধে কোনো মামলা নেই সেসব প্রতিষ্ঠানের গ্রাহকদের বকেয়া অগ্রাধিকার ভিত্তিতে ফেরত দেওয়া হবে। এ কারণেই ই-কমার্স প্রতিষ্ঠানগুলোর বিরুদ্ধে সব মামলার তথ্য সাত দিনের মধ্যে মন্ত্রণালয়ে জানাতে পুলিশ সদর দপ্তরকে বলা হয়েছে। সেই তথ্যের ভিত্তিতে পেমেন্ট গেটওয়েগুলোকে গ্রাহকদের টাকা ফেরতের নির্দেশনা দেবে বাংলাদেশ ব্যাংক।

জানা গেছে, বিতর্কিত ই-কমার্স প্ল্যাটফর্ম ইভ্যালি, ই-অরেঞ্জ, ধামাকাসহ প্রায় ৫০টি প্রতিষ্ঠানের বিরুদ্ধে গ্রাহকের কাছ থেকে অগ্রিম টাকা নিয়েও পণ্য সরবরাহ না করা, অর্থ পাচারসহ বিভিন্ন অভিযোগ রয়েছে। এ প্রেক্ষাপটে গত জুনে ‘ডিজিটাল কমার্স নির্দেশিকা’ জারি করে বাণিজ্য মন্ত্রণালয়, যেখানে অর্ডার করার ১০ দিনের মধ্যে পণ্য সরবরাহ বাধ্যতামূলক করা হয়। আর ৩০ জুন এসক্রো সার্ভিস চালু করে বাংলাদেশ ব্যাংক। এ সংক্রান্ত সার্কুলারে বলা হয়, গ্রাহকের পরিশোধ করা অগ্রিম মূল্য পেমেন্ট গেটওয়েতে জমা থাকবে। পণ্য ডেলিভারির প্রমাণ দাখিল করলে পেমেন্ট গেটওয়ে ই-কমার্স প্রতিষ্ঠানকে টাকা পরিশোধ করবে। পণ্য ডেলিভারি না করলে পেমেন্ট গেটওয়েগুলো ক্রেতাকে টাকা ফেরত দেবে।

বাংলাদেশ ব্যাংকের মতে, এ সার্ভিস চালুর পর থেকে ১৪ অক্টোবর পর্যন্ত থার্ড পার্টি পেমেন্ট গেটওয়ের মাধ্যমে ই-কমার্স গ্রাহকরা ৫০৫ কোটি টাকারও বেশি অর্থ প্রদান করেছেন। গেটওয়েগুলো সেলারদের কাছে প্রায় ২৯১ কোটি টাকা ছেড়েছে, আর এখনো আটকে আছে ২১৪ কোটি টাকা।

এর মধ্যে পুলিশের অনুরোধে ই-কমার্স প্রতিষ্ঠান কিউকমের ১৬৬ কোটি টাকা জব্দ করেছে বাংলাদেশ ফাইন্যান্সিয়াল ইন্টেলিজেন্স ইউনিট (বিএফআইইউ)। পুলিশের অপরাধ তদন্ত বিভাগ (সিআইডি) আনলকের আদেশ জারি না করা পর্যন্ত কিউকমের গেটওয়ে ফস্টার টাকা ফেরত দিতে পারবে না। ফস্টার ছাড়াও আরও ৪৮ কোটি টাকা আটকে আছে এসএসএল, সূর্যমুখী, বিকাশ, নগদ এবং সাউথইস্ট ব্যাংকে।

পেমেন্ট গেটওয়েতে আটকে থাকা গ্রাহকদের অর্থ ফেরত দিতে না পারায় হতাশা রয়েছে বাণিজ্য মন্ত্রণালয়ের কর্মকর্তাদের মধ্যেও। তারা বলছেন, গ্রাহকের স্বার্থরক্ষার জন্য এসক্রো সার্ভিস চালু হলেও তা এখন গ্রাহকদের ক্ষতির কারণ হয়ে দাঁড়িয়েছে।

সব প্রতিষ্ঠান ইউবিআইডির আওতায় আসছে

দেশের সব ধরনের ব্যবসায়ী প্রতিষ্ঠানকে ৩১ জানুয়ারির মধ্যে ইউনিক বিজনেস আইডেনটিফিকেশনের (ইউবিআইডি) আওতায় আনা হচ্ছে। এর মাধ্যমে সরকারের পক্ষে ইউনিয়ন পর্যায় পর্যন্ত সব ধরনের ব্যবসা প্রতিষ্ঠান কেন্দ্রীয়ভাবে মনিটর করা সম্ভব হবে বলে মনে করছে বাণিজ্য মন্ত্রণালয়।

ইউবিআইডির ক্ষেত্রে এনবিআরের ইস্যু করা বিজনেস আইডেনটিফিকেশন নম্বর (বিআইএন) নেওয়া বাধ্যতামূলক করার পাশাপাশি ট্যাক্স আইডেনটিফিকেশন নম্বরও (টিআইএন) সংযুক্ত করা হবে। এতে প্রত্যন্ত অঞ্চল পর্যন্ত গড়ে ওঠা ব্যবসা প্রতিষ্ঠানগুলো থেকে রাজস্ব আদায় সহজ হবে।

কমিটি পুনর্গঠন করা হচ্ছে

ই-কমার্সে প্রতারিত গ্রাহকদের অধিকার রক্ষায় সরকারের করণীয় নির্ধারণে মন্ত্রিপরিষদ বিভাগ উচ্চপর্যায়ের একটি কমিটি করে। এ ছাড়া প্রতারণা বন্ধে নতুন আইন প্রণয়ন এবং কারিগরি পরামর্শের জন্য বাণিজ্য মন্ত্রণালয় দুটি কমিটি করে; কিন্তু এসব কমিটিতে গোয়েন্দা সংস্থার লোক না থাকায় কমিটি পুনর্গঠনের সিদ্ধান্ত হয়েছে।

দয়া করে নিউজটি শেয়ার করুন..

© All rights reserved © 2019 shawdeshnews.Com
Design & Developed BY ThemesBazar.Com
themebashawdesh4547877